পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট
সংগ্রহ ও তারিখ নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। নিয়ম
মেনে টিকা নিন। হজের নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন। যাঁরা পড়তে
পারেন না, তাঁরা অন্য হাজিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন। হজের কোনো বিষয়ে বিভিন্নতা
দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যে আলেমের ইলম ও তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তার সমাধান অনুযায়ী
আমল করবেন, তবে সে মতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না। প্রয়োজনে পরিচিত
অথবা এলাকার দলনেতার (গ্রুপ লিডার) সঙ্গে আলাপ করতে পারেন।
মানসিক প্রস্তুতি জরুরি
হজ যাত্রার শুরুতে নিজেকে
এমনভাবে তৈরি করে নিন, যেন দেহ-মনে কোনো কষ্ট না থাকে। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে
হজ হলো দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত এবং শ্রমসাধ্য ব্যাপার। আপনার মালপত্র হালকা রাখুন, কারণ
আপনার মাল আপনাকেই বহন করতে হবে। আপনার সঙ্গীদের সম্মান করুন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকৃত
ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনার দলে (গ্রুপে) দুর্বল বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি
খেয়াল রাখবেন। সৌদি আরবে গিয়ে বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজ কাবা শরিফে জামাতে আদায় করার
চেষ্টা করবেন (অনেকে বাসায় অথবা মহল্লার মসজিদে নামাজ আদায় করেন)। যাত্রার শুরুতে
ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ পড়তে ও বাসায় চলাফেরায় একে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন।
ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ পড়তে ও বাসায় চলাফেরায় একে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন।
সৌদি আরবের মানুষ আরবি
ভাষায় কথা বলে, সেখানকার রাস্তাঘাট আপনার অচেনা। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। হজযাত্রীদের
সেবা করার জন্য সৌদি আরব ও বাংলাদেশ সরকার নানা রকম ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র
সংগ্রহ করা দরকার। যেমন: ১. বৈদেশিক মুদ্রা (ডলার অথবা রিয়াল) কেনা, ২. পাসপোর্ট,
ভিসা, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ ৩. ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট
(প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড়
আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ কাপড়। ইহরামের কাপড় হবে সাদা। সুতি হলে ভালো
হয়। নারীদের জন্য: সেলাইযুক্ত স্বাভাবিক পোশাকই ইহরামের কাপড় ) ৪. নরম ফিতাওয়ালা
স্পঞ্জের স্যান্ডেল ৫. ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হলে কটিবন্ধনী (বেল্ট)
৬. গামছা, তোয়ালে ৭. আপনার জন্য আরামদায়ক পোশাক যেমন: লুঙ্গি, গেঞ্জি, পায়জামা, পাঞ্জাবি
সঙ্গে নিতে পারেন ৮. সাবান, টুথপেস্ট, টয়লেট পেপার, ব্রাশ, মিসওয়াক ৯. নখ কাটার যন্ত্র,
সুই-সুতা ১০. থালা, বাটি, গ্লাস ১১. হজের বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক ১২. কাগজ-কলম,
১৩. প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা (ভিড় বা অন্য কোনো
কারণে ভেঙে গেলে ব্যবহারের জন্য) ১৪. বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে
বাড়ি ফেরার জন্য) ১৫. নারীদের জন্য বোরকা ১৬. মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা সুটকেস
(তালা-চাবিসহ); ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখতে হবে। ১৭.
মোবাইল সেট (সৌদি সিম কিনে ব্যবহার করতে পারবেন) বাইরে আরও কিছু প্রয়োজনীয় মনে হলে
তা নিয়ম মেনে সঙ্গে নিতে হবে।
ঢাকার হাজি ক্যাম্প
বিমানে যাত্রার আগে হাজি
ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার মালপত্র খেয়াল রাখবেন। একদল সুযোগসন্ধানী লোক
মালপত্র চুরি করে। কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন।
ব্যাগেজ নিয়মকানুন
বিমানে উড্ডয়নকালে হাত
ব্যাগে ছুরি, কাঁচি, দড়ি নেওয়া যাবে না। হজযাত্রীর লাগেজে নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর,
হজ এজেন্সির নাম এবং সৌদি আরবে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির প্রতিনিধির মোবাইল নম্বরসহ
ঠিকানা ইংরেজিতে লেখা বাধ্যতামূলক। বিমান কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা অনুযায়ী বিমানে কোনো
হজযাত্রী সর্বোচ্চ ৩০ কেজির বেশি মালামাল বহন করতে পারবেন। নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র
ব্যতীত কোনো ওষুধ নিতে পারবেন না। চাল, ডাল, শুঁটকি, গুড় ইত্যাদিসহ পচনশীল খাদ্যদ্রব্য
যেমন: রান্না করা খাবার, তরিতরকারি, ফলমূল, পান, সুপারি ইত্যাদি সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া
যাবে না।
জরুরি কাগজপত্র
১০ কপি পাসপোর্ট আকারের
ছবি, স্ট্যাম্প আকারের ৬ কপি ছবি, পাসপোর্টের ২-৩ পাতার সত্যায়িত ফটোকপি, স্বাস্থ্য
পরীক্ষার সনদ, টিকা কার্ড। নারী হজযাত্রীর ক্ষেত্রে শরিয়তসম্মত মাহরামের সঙ্গে সম্পর্কের
সনদ, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ। প্রত্যেক হজযাত্রীর ৭ সংখ্যার একটি পরিচিতি নম্বর
থাকে। এর প্রথম ৪ সংখ্যা এজেন্সির নম্বর আর শেষ ৩ সংখ্যা হজযাত্রীর পরিচিতি নম্বর।
এই নম্বরটি জানা থাকলে হজযাত্রী ও তাঁর আত্মীয়স্বজন ওয়েবসাইটে ওই হাজির তথ্য পেতে পারেন
সহজে। বাড়তি সতর্কতার জন্য নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, হজ এজেন্সির নাম এবং সৌদি
আরবে সংশ্লিষ্ট হজ
এজেন্সির প্রতিনিধির মোবাইল
নম্বরসহ ঠিকানা ইংরেজিতে লিখে কাছে রাখুন। বাসস্থানের বাইরে গেলে হজযাত্রীকে পরিচয়পত্র,
মোয়াল্লেম কার্ড ও হোটেলের কার্ড অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে।
ইহরাম
ইহরাম অর্থ সংকল্প বা নিয়মবিশেষ।
মক্কার কাছে নিদিষ্ট স্থানে বিধি মেনে হজ করার সংকল্প করাকে ইহরাম বলে। আপনার গন্তব্য
ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায় তা জেনে নিন। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম বাঁধা
নয়; যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম বাঁধতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কায়
যান। যদি মক্কা যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বাঁধা ভালো। কারণ,
জেদ্দা পেঁৗছানোর আগেই ‘মিকাত’ বা ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান। বিমানে যদিও ইহরাম
বাঁধার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাটাও
দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে এ জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ
হবে। ইহরাম গ্রহণের পর সাংসারিক কাজ–কর্ম নিষেধ যেমন: সহবাস করা যাবে না, পুরুষদের জন্য
কোনো সেলাই করা জামা, পায়জামা ইত্যাদি পরা বৈধ নয়, কথা ও কাজে কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে
না, নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ ও শরীরের একটি পশমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না, কোনো ধরনের
সুগন্ধি লাগানো যাবে না, কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না। তবে ক্ষতিকারক সব প্রাণী
মারা যাবে। ক্ষতি করে না এমন কোনো প্রাণী মারা যাবে না।
বিমানবন্দর
উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে
পৌঁছান। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মাল দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, দেখে নেবেন।
বিমানের কাউন্টারে মাল রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে
ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর হাতে থাকা নিজ
মালপত্র যত্নে রাখুন। বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার
কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে
যত্নে রাখুন। সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন।
জেদ্দা বিমানবন্দর
মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনার
জন্য জেদ্দা হজ টার্মিনালে অপেক্ষা করবে। সেখান থেকে তাঁরা আপনাকে মক্কায় যে বাড়িতে
থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবেন। মোয়াল্লেমের নম্বরসহ (আরবিতে লেখা) কবজি বেল্ট দেওয়া
হবে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম
নম্বর, আপনার নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন। জেদ্দা থেকে
মক্কায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। চলার পথে তালবিয়া পড়ুন (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা
লাব্বাইক…)।
মক্কায় পৌঁছে
মক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার
জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। আর যদি নামাজের ওয়াক্ত হয়, নামাজ
আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরাহর নিয়ত করে ওমরাহ পালন করুন।
# মসজিদুল হারামে (কাবা
শরিফ) বেশ কয়েকটি প্রবেশপথ আছে; সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি
ও ইংরেজিতে ১, ২, ৩ নম্বর ও প্রবেশপথের নাম আছে, যেমন ‘বাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ’। আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন
বা বের হবেন। আপনার সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট
নম্বরের গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরের ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে
খুঁজে পাবেন।
# কাবা শরিফে স্যান্ডেল-জুতা
রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন। নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখুন। অথবা ব্যাগে নিজের
কাছে রাখুন। এখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে আর খঁুজে পাবেন না। প্রতিটি জুতা রাখার র্যাকেও
নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন।
# মসজিদের ভেতরে–বাইরে
জমজমের পানি (স্বাভাবিক ও ঠান্ডা) রাখা আছে। প্রাণ ভরে পানি পান করতে পারেন।
# কাবা ঘরের চারটি কোণের
আলাদা নাম আছে। যেমন: হাজরে আসওয়াদ, রকনে ইরাকি, রকনে শামি ও রকনে ইয়ামেনি। হাজরে আসওয়াদ
বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে কাবাঘরের পরবর্তী কোণ রকনে ইরাকি, (দুই কোণের মাঝামাঝি
স্থান মিজাবে রহমত ও হাতিম)। তারপর যথাক্রমে রকনে শামি ও রকনে ইয়ামেনি। এটা ঘুরে আবার
হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে
হয়।
# ওমরাহর নিয়মকানুন আগে
জেনে নেবেন, যেমন: সাতবার তাওয়াফ করা, জমজমের পানি পান করা, নামাজ আদায় করা, সাঈ করা
(সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাতবার দৌড়ানো), মাথা মুণ্ডানো অথবা চুল ছোট করা—এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করা। ওয়াক্তীয় নামাজের সময় হলে যতটুকু হয়েছে ওই
সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।
ওমরাহ
হিল (কাবা শরিফের সীমানার
বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ
করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে ওমরাহ বলে।
হজ তিন প্রকার—তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ। হজের মাসসমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) ওমরাহর
নিয়তে ইহরাম করে, উমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে
হজ ও ওমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে ওমরাহ ও হজ করাকে হজে কিরান বলে। আর শুধু হজ পালনের
উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে।
দোয়া কবুলের জায়গা
পবিত্র মক্কায় কাবা শরিফের
বিভিন্ন জায়গায় দোয়া কবুল হয়ে থাকে। ১. মাতাফ (তাওয়াফ করার স্থান)। ২. মুলতাযাম (হাজরে
আসওয়াদ থেকে বায়তুল্লাহর দরজা পর্যন্ত)। ৩. হাতিমের মধ্যে। ৪. মিযাবে রহমতের মধ্যে।
৫. কাবাঘরের ভেতরে। ৬. জমজম কূপের কাছে (যদিও কূপ এখন বেজমেন্টের নিচে, চাইলেও এখন
দেখা যায় না)। ৭. মাকামে ইবরাহিমের কাছে। ৮. সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের ওপর। ৯. সাফা ও
মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে। ১০. বায়তুল্লাহর দিকে যখন নজর পড়ে। ১১. রুকনে ইয়ামানি ও
হাজরে আসওয়াদের মাঝখানে। ১২. আরাফাতের ময়দানে। ১৩. মুযদালিফার ময়দানে। ১৪. মিনার ময়দানে
এবং মিনার মসজিদে খায়েফে। ১৫. কঙ্কর মারার স্থানে। সেসব জায়গায় খুব আদব, ভক্তি ও বিনয়ের
সঙ্গে খাস দিলে দোয়া করা দরকার। দুনিয়ার যাবতীয় জায়েজ নেক মাকসুদের জন্য দোয়া করা
উচিত।
আরও কিছু পরামর্শ
ভাষার ভিন্নতা, নতুন দেশ,
নতুন পরিস্থিতি—বিবিধ কারণে পথ হারিয়ে দিশেহারা হতে পারেন। তাই সতর্ক
থাকুন। পরিচয়পত্র, ঠিকানা সব সময় নিজের কাছে রাখুন। দলবব্ধভাবে বাইরে বের হলে ভালো।
# সৌদি আরবে অবস্থানকালে
কোনো চাঁদা ওঠানো, সাহায্য চাওয়া, ভিক্ষা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং এগুলো থেকে
বিরত থাকুন।
# ট্রাফিক আইন মেনে চলুন,
সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হোন। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে
সাবধানে পার হবেন। কখনো দৌড় দেবেন না।
# নির্ধারিত স্থানে পশু
কিনে অথবা ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবির) কুপন কিনে কোরবানি করা যায়।
# মনে রাখবেন, মসজিদে নববী
ও কাবা শরিফের সীমানার মধ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
# শরীরের কোনো স্থান
কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করুন এবং ক্ষতস্থানটি প্লাস্টার কিংবা ব্যান্ডেজ
দিয়ে ঢেকে দিন।
# হাঁচি কিংবা কাশি দেওয়ার
সময় অবশ্যই আপনার মুখ ঢেকে নিন। কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ
হজ কার্যালয়ের মেডিকেল সদস্যদের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন। হারানো হজযাত্রীদের
খুঁজে পেতে বাংলাদেশ হজ কার্যালয়ে অবস্থিত আইটি ডেস্ক সাহায্য করে। হজযাত্রীদের যাবতীয়
তথ্য দেশের পরিবার-পরিজনের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে পৌঁছানো যায়।
# আপনার ট্রাভেল এজেন্সি
আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল)
না দিলে আপনি মক্কা ও মদিনার বাংলাদেশ হজ কার্যালয়কে জানাতে পারেন।
# এতেও আপনি সন্তুষ্ট না
থাকলে সৌদির ওজারাতুল হজকে (হজ মন্ত্রণালয়) লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
# রোদ থেকে বাঁচতে দিনের
বেলায় মিনা ও আরাফাতে ছাতা ব্যবহার করুন।
# আরাফাতের ময়দানে অনেক
প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি
হয়, তাই সাবধান থাকবেন।
# মুযদালিফায় রাতে থাকার
জন্য প্লাস্টিকের পাটি পাওয়া যায়। এটি মক্কায়ও কিনতে পারবেন।
# আরাফাতের ময়দান থেকে
যদি হেঁটে মুযদালিফায় আসেন, পথে টয়লেট সেরে নেবেন। কেননা, মুযদালিফায় টয়লেটে অনেক ভিড়
লেগে যায়।
# মিনায় যে তাঁবুতে অবস্থান করবেন, সেসব তাঁবু চিহ্নিত
করে নিন। মোয়াল্লেম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়; তা যত্নে রাখুন। বাইরে
বের হওয়ার সময় তা সঙ্গে রাখুন।
# হজযাত্রী সচেতন থাকলে হারিয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই।
# মক্কায় ঐতিহাসিক স্থান
হেরা গুহা, সওর পর্বত, মিনায় আল-খায়েফ মসজিদ, নামিরা মসজিদ, আরাফাতের ময়দান, মুযদালিফা,
জামারা (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোঁড়ার স্থান) জান্নাতুল মা’আলা (কবরস্থান), মসজিদে জিন, মক্কা জাদুঘর, গিলাফ তৈরির কারখানা, লাইব্রেরি।
মদিনায় মসজিদে নববী, জান্নাতুল বাকি (কবরস্থান), ওহুদ পাহাড়, খন্দক, মসজিদে কুবা,
মসজিদে কেবলাইতাইন, মসজিদে জুমআ, মসজিদে গামামাহ, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাদশাহ ফাহাদ
কোরআন শরিফ প্রিন্টিং কমপ্লেক্স ঘুরে আসতে পারেন।
No comments:
Post a Comment